ব্লগ আর্কাইভস

ফাইনাল রেন্ডারঃ তাওহীদি জনতার প্রতি আহ্বান (পর্ব-১)

ফাইনাল রেন্ডারঃ তাওহীদি জনতার প্রতি আহ্বান (পর্ব-১)

ফাইনাল রেন্ডারঃ তাওহীদি জনতার প্রতি আহ্বান (পর্ব-১)

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। আলহামদুলিল্লাহ, আসসালাতু আসসালামু আলা রসুলিল্লাহ।

সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আমরা মুসলিম জাতি। হযরত মুহাম্মদ (সা) এর উম্মত। আমরা একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করি। আমরা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করি না। আমরা আল্লাহর হুকুমের বাইরে অন্য কারো আনুগত্য করি না। আমরা একমাত্র আল্লাহরই আইন মানি। তাঁর আইন ছাড়া হাসিনা, খালেদা, এরশাদ কিংবা এজাতীয় কোন তাগুত মুরতাদদের বানানো মানব রচিত কুফুরি আইন আমরা মানি না। তাওহীদের কালিমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” আমাদের এসব কিছুই শিক্ষা দেয়। মুহাম্মদ (সা)-ই আমাদের দ্বীনী, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক সকল ক্ষেত্রে একক ও একমাত্র আদর্শ। অন্য কোন জাতীয়, বিজাতীয় ব্যাক্তি- হোক সেটা গান্ধী কিংবা জিন্নাহ, মুজিব কিংবা জিয়া, মওসেতুন কিংবা প্লেটু আমাদের আদর্শ হতে পারে না। আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন বলেছেনঃ “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য যারা আল্লাহর কাছে ও আখেরাতে আশা রাখে তাদের জন্য আল্লাহর রাসুল (সা) এর মধ্যেই রয়েছে উত্তম আদর্শ”।

সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা, রাসুলুল্লাহ (সা) কে কটুক্তিকারী কিংবা হেয়োকারীর শাস্তি হচ্ছে কতল তথা হত্যা। ইমাম মালেক (রাহি) ও ইমাম আহমদ (রাহি) বলেছেনঃ “এই শ্রেণীর অপরাধীরা তওবা করলেও তাদেরকে হত্যা করতে হবে।”

আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ “বলো, তোমরা কি আল্লাহ্‌, তাঁর আয়াত, তাঁর রাসুল (সা) এর বেপারে তামাশা করছিলে? কোন অজুহাত পেশ করো না, তোমরা কাফের হয়ে গেছো-ঈমান আনার পর”

রাসুলুল্লাহ (সা) কে গালিদানকারী কিংবা কটুক্তিকারীদেরকে সাহাবী গন কারো অনুমতি ছাড়াই, কারো হুকুমের অপেক্ষা না করেই হত্যা করেছেন। এবং রাসুলুল্লাহ (সা) পরবর্তিতে তা অনুমোদন করেছেন।

এ ব্যাপারে এক দাসী হত্যার ঘটনা আবু দাউদের ৪৩৬১ এবং সুনানে নাসায়ীতে ৪০৮১ নম্বর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হাদিসটির সারাংশ নিম্নরূপঃ

একজন অন্ধ সাহাবী, যার একজন দাসী ছিলো। যে ছিলো তাঁর উম্মু ওয়ালাদ। কিন্তু এই দাসী আল্লাহর রাসুল (সা)কে অভিশাপ দিতো। তাঁকে এই কাজ না করার করার জন্য সেই অন্ধ সাহাবী সাবধান করার পরেও সেই দাসী বিরত হতো না। এক রাতে সেই দাসী আল্লাহর রাসুল (সা) কে অভিশাপ দিয়েই যাচ্ছিলো। তখন সেই অন্ধ সাহাবী একটু ছুরি নিয়ে সেই দাসীর পেটে বিদ্ধ করলেন এবং চাপ দিতে থাকলেন যতক্ষন না সেই দাসির মৃত্যু হয়। সকালে আল্লাহ্‌র রাসুল (সা) এর নিকট খবর পৌছলো। আল্লাহ্‌র রাসুল (সা) লোকজনকে একত্রিত করে বললেনঃ “আমি আল্লাহর নামে তোমাদের আদেশ করছি, যে এই কাজটি করেছো সে উঠে দাঁড়াও।” সেই সাহাবী উঠে দাঁড়ালেন। এবং রাসুল (সা) এর সামনে এসে বলতে লাগলেনঃ “হে আল্লাহর রাসুল, আমিই সেই ব্যাক্তি-যে তাকে হত্যা করেছে। সে আপনাকে অভিশাপ দিতো এবং তাঁকে বিরত হতে বলার পরেও সে বিরত হত না। তাঁর গর্ভ থেকে আমার মুক্তার মত সন্তান হয়েছে এবং সে নিজেও আমার প্রতি খুব সদয় ছিলো। কিন্তু গতরাতে সে আপনাকে অভিশাপ দিতে লাগলো। তারপর আমি ছুরি দিয়ে আঘাত করলাম ও হত্যা করলাম।”

আল্লাহ্‌র রাসুল (সা) বললেনঃ “জেনে রেখো, ঐ মহিলার কোন রক্তমূল্য নেই” (সুবহান আল্লাহ্‌) 

ঠিক তেমনি ভাবে রাজিব ওরুফে থাবা বাবা, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয়, নিলয় নীল দের রক্তের কোন মূল্য নেই। যারাই রাসুলুল্লাহ (সা) কে নিয়ে তামাশা করবে, কটুক্তি করবে তাদের রক্তের কোন মূল্য নেই।

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রাহি) উল্লেখ্য করেছেন, আলেমগন একমত যে কোন ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ (সা) কে হেয়ো করলে সে কাফির, মুরতাদ হয়ে যায়। তাঁর শাস্তি হচ্ছে তাঁকে কতল করে দেয়া। এ ব্যাপারে সকল ওলামায়েকেরাম এর ইজমা সংগঠিত হয়েছে। এ ধরনের বর্ণনা আরো বর্ণিত হয়েছে ইবনে মঞ্জুর (রাহি) থেকে, কাজী ইয়াদ (রাহি) থেকে এবং ইমাম খাবতাবি (রাহি) থেকে। যা “আসসারিবাল মাসলুল আলা শাতিবির রসুল” নামক কিতাবে স্পষ্ট রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। এই রাজিব ওরুফে থাবা বাবা, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয়, নিলয় নীল শ্রেণীর সকল নাস্তিক মুরতাদ যারা রাসুলুল্লাহ (সা) এর বিরুদ্ধে কটুক্তি করছে তাদের রক্তের কোন মূল্য নেই। তাদেরকে অনায়াশে হত্যা করা যাবে। এর জন্য কারো অনুমতি লাগবে না, এর জন্য কারো কাছে ধরনা দিতে হবে না। বরং তাদের হত্যা করা অন্যতম একটি সওয়াবের কাজ। এটা আমাদের ঈমানের দাবি।  অতএব, রাজিব ওরুফে থাবা বাবা, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয়, নিলয় নীল শ্রেণীর যারাই রাসুলুল্লাহ (সা) কে কটুক্তি পূর্বে করেছে, বর্তমানে করছে ও ভবিষ্যতে করবে তাদের একটা একটা করে খুঁজে বের করে হত্যা করতে হবে। এটাই করণীয়, এটাই দ্বীন ইসলাম, কারন তাদের রক্তের কোন মূল্য নেই। তাদের হত্যাকারীকে কিছুই বলা হবে না।

প্রিয় তাওহীদি জনতা, আমাদের এই জমিনে এসম নাস্তিক মুরতাদ ব্লগার চক্র বহুদিন যাবত ইহুদী খ্রিষ্টানদের এক সুগভির চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে। আর তাদের সাথে যোগ দিয়েছে এদেশের মুরতাদ সরকার। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে কারন, আমাদের এই জমীনে বর্তমানে ইসলামি শরীয়ত কায়েম ও বিজয়ী নেই। বর্তমানে কাফের মুরতাদ সরকার সমূহ আওয়ামীলীগ, বি এন পি, জাতীয়পার্টি, জাসদ ইত্যাদি কুফুরিপন্থী দলের দ্বারা গঠিত গনতান্ত্রিক সরকার আর ইসলামি শরীয়ত বাদ দিয়ে মানব রচিত কুফুরি ও শির্কি আইনের প্রবর্তন করেছে।

আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন বলেছেনঃ আল্লাহর পাশাপাশি তারা তাদের পন্ডিত ও সংসার বিরাগীদেরকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহন করেছে মারিয়ামের পুত্র “মাসিহ”কেও। অথচ তারা আদিস্ট ছিলো একক ইলাহ এর ইবাদতের জন্য। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তারা তাঁর সাথে যে সমস্ত শরীক সাব্যস্ত করে তাঁর থেকে তিনি পুতঃপবিত্র।

ইহুদী নাসারাদের প্রসঙ্গে এই আয়াত টি নাজিল হয়েছিলো। আল্লাহর রাসুল (সা) যখন সাহাবায়েকেরাম এর মসলিসে এই আয়াত টি তিলাওয়াত করলেন। তখন রাসুল (সা) এর দরবারে ইহুদীদের পন্ডিত আদি বিন হাতিম (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। আদি বিন হাতিম (রাঃ) রখন সবে মাত্র মুসলিম হয়েছেন। আদি বিন হাতিম (রাঃ) বলে উঠলেন ইয়া রাসুলুল্লাহি (সা) আমরা তো কখনো আমাদের ওলী বুজুর্গদের কে আমাদের আহবার রূহবান, আমাদের ধর্মজাজকদেরকে আমাদের আল্লাহর আসনে বসাইনি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা) বললেনঃ আল্লাহ্‌ যা হালাল করেছেন তারা কি তা হারাম করতো না ? আল্লাহ্‌ যা হারাম করেছেন তারা কি তা হালাল করতো না ? এবং তোমরা কি সেটা মেনে নিতে না ? আদি বিন হাতিম (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ, তাতো করতাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সা) বললেনঃ আল্লাহর হালাল কে তারা হারাম করতো আর আল্লাহর হারামকে তারা হালাল করতো আর তোমরা সেটা মেনে নিতে এটাই হলো তাদের ইবাদত।

আমাদের দেশের কাফের মুরতাদ সরকারগুলো এখানে নব্য আহবার রূহবান এর ভুমিকা নিয়েছেন। যুগ যুগ ধরে মুসলমানদের উপর এই কুফুরি শির্কি আইন তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অ তাদেরকে প্রতারণায় ফেলে চাপিয়ে রেখেছে।

যেমন, আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা মদকে হারাম করেছেন, আর এই মুরতাদ সরকারগুলো মদকে হালাল করে দিয়েছে। মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা জিনা/ভ্যাবিচারকে হারাম করেছেন, আর এই মুরতাদ সরকারগুলো পতিতাবৃত্তির জন্য লাইসেন্স দিচ্ছে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা সুদকে হারাম করেছেন, সুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, আর এই মুরতাদ সরকারগুলো সুদের ভিত্তিতে পুরো অর্থনিতি পরিচালনা করছে। সুদের ভিত্তিতে ব্যাংক পরিচালনার লাইসেন্স দিচ্ছে।

অথচ আল্লাহ সুবহাহু ওয়াতালা বলেছেনঃ তারা কি জাহিলিয়াতের বিধিবিধান চায়? অথচ আল্লাহর চেয়ে উত্তম বিধানদাতা আর কে রয়েছে ? আল্লাহর বিধানের চেয়ে উউতম বিধান, উত্তম ফয়সালা আর কার রয়েছে ?

অত্যন্ত দুঃখ্যজনক হলেও সত্য তারা এই সমস্ত জাহেলি/বাতেলি আইনকে বলছে যুগোপযোগী আইন। আর আহকামুল হাকিমিন আল্লাহর দেয়া আইনকে বলছে মধ্যযুগিও শাসন। এটা তাদের আরেকটি সুস্পষ্ট কুফুরি। এছাড়াও এদেশের মুরতাদ সরকারগুলো যুগ যুগ ধরে সারা বিশ্বে মুসলমানদের সাথে যুদ্ধরত ইহুদী, খ্রিস্তান, হিন্দু, বৌদ্ধ দেশগুলোর (যেমনঃ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মায়ানমার ইত্যাদি) পা চাটা গোলামের ভুমিকা পালন করছে। এদেরকে বন্ধু, সাহাজ্যকারী ও পরামর্ষক হিসেবে গ্রহন করছে।

আল্লাহ সুবহাহু ওয়াতালা বলেছেনঃ “হে মুমিনগন, তোমরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে আওলিয়া, বন্ধু, অভিভাবিওক, রক্ষক হিসেবে গ্রহণ করো না। কারন তারা একে অপরের আওলিয়া। তোমাদের মধ্যে যে তাঁদেরকে বন্ধু হিসেবে মেনে নিবে, সাহায্যকারী হিসেবে মেনে নিবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্‌ জালিমদেরকে পথ পদর্শন করেন না।”এই মুরতাদ সরকার গুলো এদেশে ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দুদের কুফুরি/শির্কি আদর্শ ও ক্রিষ্টি কালচার প্রচার প্রসার করছে। এবং কুফুর সরকার হিসেবে ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দুদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এদের শিক্ষানীতি, এদের নারিনিতি আমাদের এই মুসলমান দেশে চাপিয়ে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের আলেম সমাজ অনেক আন্দোলন, সংগ্রাম করেছেন। সেই সব আন্দোলনের কারনে অনেক আলেম, অনেক মাদ্রাসার ছাত্র শহীদ হয়েছেন। জেল জরিমানার শিকার হয়েছেন। এই নাস্তিক মুরতাদ সরকার সমুহ ইহুদি, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, হিন্দুদের বন্ধু ও আওলিয়া হয়ে ইতিমধ্যে দ্বীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে।

চলবে…